মহ ইতি কাল
মোনালি রায়
প্রতি সময়ে আমরা প্রত্যেকে কিছু খুঁজছি, আমাদের জানলাগুলো সরে সরে যাচ্ছে। লেন্সের রেঞ্জ, ফোকাল লেন্থ বদলে বদলে যাচ্ছে। আমরা হাতড়ে মরছি মরীচিকা, অবয়ব, অ্যাবস্ট্রাক্ট আইডিয়া। দেওয়াল শহরের প্রায় সবকটা ছোট বড় সমাধি বুকের হাড় হিম করে বসে থাকে, নিঝুম। উদোম মাঠ, ফুসফুসে যতদূর টেনে নেওয়া যায়, ততদূর আকাশ.... সবাই এক কথা বলে না, বিভেদের গল্প শোনায়। বিজ্ঞানীরা ল্যাবে গিনিপিগে যে ভেদ পায় না, সেই ভেদে মানুষ মারে মানুষ। লোভগুলো শেষরাতের চামচিকির মত ঝুলে থাকে ক্লান্ত লাল দেওয়ালে। মহাকাল দ্বাররক্ষী হতে গিয়ে হাঁপিয়ে মরে। এরকমই কোনও দেওয়ালের পেটের ভেতর মোমবাতি জ্বালিয়ে অপ্রেম খুঁজে মরে প্রেম..... হাজার প্রেমের মোমবাতি এক ফুঁয়ে নিভিয়ে সময় বলে " এরা সেইসব বেয়াক্কেলে প্রশ্নচিহ্ন যাদের কোনও উত্তর কোনও কালে মেলে না।" অপ্রেম ঘাড় উঁচু, উদ্ধত দাঁড়িয়ে..... " যদি প্রেম দিলে না প্রাণে! " মহাকাল তাচ্ছিল্য হেসে এক ফ্রেমে ধরে নেয় অপ্রেম.... " এইগুলি সেইসব উত্তর, যাদের প্রশ্নাবলী অনুচ্চারিত থেকে গেল! "
অন্যদিকে আরশি নগর নারসিবৃন্দে সরগরম। মহলে মহলে শীশ আশ্লেষে জড়িয়ে রাখে নারসিদের দৃষ্টিপথ....." আর একটু বোস, আমার ভেতরে আরো কিছু কথা ছুড়ে দিয়ে যা, মৃদু, বাঁকা হাসি, কটাক্ষহনন।" গলে গিয়ে নারসি বলে, "এক এক দিন জলে যায় রে সত্যি। সেদিনগলোতে তোর মধ্যে পা ডুবিয়ে তোকে দেখতে দেখতে নিজেকে খুঁটিয়ে চেনা যায়। তোর সাথে কথা বলতে বলতে নিজের হাজার গিঁট খুলে যায়। শুধু তোর সাথে ওইটা করা যায় না। আমি আস্ত মায়া আর তুই কেবল ছায়া!"
কাল মুচকি হাসে।
অন্যলোক থেকে আসে পাথর ভাঙা ট্রেনের শব্দ, কয়লার উল্লাস। এখন, এই বর্তমান স্বপ্নে, এই শহর জেগে উঠবে মোবাইল রিংটোনে, এফ এমে, ওলায়। দঙ্গলের পর দঙ্গল ধোঁয়ার পুটুলি হজম করে চারপায়ে চারবাগ পেরিয়ে অফিস যাবে। কাঠে কুড়ুলে লেগে যাবে নিত্যকার সত্য লড়াই। কুড়ুল আস্ফালন করবে -- "আমাদের ধার আছে আমরা কাটব, মার আছে তাই মারব। তোরা মার খাবি, মরে যাবি, শব্দটি না করে। এটাই নিয়ম।" সমবেত কাঠেদের জ্বলে ওঠাও দেখবে মহাকাল চুপ করে....
" তোরা তোদের রাগ, ঘেন্না, বদরক্তের কোপ আমাদের ঘাড়ে ঝেড়ে নিজেদের ক্ষ্যামা ঘেন্নাপিত্তিতে ঢেকে রাখিস, কাপুরুষ!"
রোষ আর লড়াই থেকে বহুদূরে অন্ধকার। শুনসান নিস্তব্ধতা। সময়ের চোখ বন্ধ। দূরের বা কাছের ল্যাম্পপোস্ট বা চাঁদ বা তারা কাকতালীয়ভাবে একসাথে আলো পাঠানো বন্ধ করেছে। নিজের বুকের শব্দ একটু একটু বড় হচ্ছে বিন্দু থেকে ছোট থেকে বড় ও অতি বড় বৃত্ত হয়ে গোটা ঘর গমগমিয়ে দিচ্ছে। অতি দ্রুতলয় দ্রিমদ্রিম শব্দ। সময় অবাক হল না। ভগবান আসছেন নিজের সাথে মুখোমুখি বসতে।
~ তুমি কে ? ভগবান!
> আমায় চেনোনা! আমি অনন্ত, সবাই আমাকেই বলে অস্তিত্ব। তুমি কে হে?
~ আমি নগন্য, প্রায় শূন্য। আমার নাম মূহুর্ত।
নগন্য থেকে নগন্যতম প্রায় শূন্য মূহুর্তের মালা বুনে চলেছে সুতো, এক কাল থেকে অন্য এক কাল, এক গ্রহাণুপুঞ্জ থেকে অন্য গ্রহাণুপুঞ্জ। মেঘ, বৃষ্টি, জমি, আগুন, বীজ বুনে চলেছে... প্রাণ থেকে প্রাণের বিবর্তনে মায়াবী রেশমের জাল.... ছাড়িয়ে নিতে গেলে জড়িয়ে যায় প্রত্যঙ্গ, শ্বাস, রক্তকণায়.... জড়িয়ে যাচ্ছে, ভিজে যাচ্ছে, পুড়ে যাচ্ছে মায়ারজ্জু এমনিই... দরদাম তুল্য মেপে মূল্য দেবে এমন কার সাধ্য! বিন্দু বিন্দু জুড়ে জুড়ে কালের অথৈ সমুদ্রে আমরা, কেউ না!
অন্যদিকে আরশি নগর নারসিবৃন্দে সরগরম। মহলে মহলে শীশ আশ্লেষে জড়িয়ে রাখে নারসিদের দৃষ্টিপথ....." আর একটু বোস, আমার ভেতরে আরো কিছু কথা ছুড়ে দিয়ে যা, মৃদু, বাঁকা হাসি, কটাক্ষহনন।" গলে গিয়ে নারসি বলে, "এক এক দিন জলে যায় রে সত্যি। সেদিনগলোতে তোর মধ্যে পা ডুবিয়ে তোকে দেখতে দেখতে নিজেকে খুঁটিয়ে চেনা যায়। তোর সাথে কথা বলতে বলতে নিজের হাজার গিঁট খুলে যায়। শুধু তোর সাথে ওইটা করা যায় না। আমি আস্ত মায়া আর তুই কেবল ছায়া!"
কাল মুচকি হাসে।
অন্যলোক থেকে আসে পাথর ভাঙা ট্রেনের শব্দ, কয়লার উল্লাস। এখন, এই বর্তমান স্বপ্নে, এই শহর জেগে উঠবে মোবাইল রিংটোনে, এফ এমে, ওলায়। দঙ্গলের পর দঙ্গল ধোঁয়ার পুটুলি হজম করে চারপায়ে চারবাগ পেরিয়ে অফিস যাবে। কাঠে কুড়ুলে লেগে যাবে নিত্যকার সত্য লড়াই। কুড়ুল আস্ফালন করবে -- "আমাদের ধার আছে আমরা কাটব, মার আছে তাই মারব। তোরা মার খাবি, মরে যাবি, শব্দটি না করে। এটাই নিয়ম।" সমবেত কাঠেদের জ্বলে ওঠাও দেখবে মহাকাল চুপ করে....
" তোরা তোদের রাগ, ঘেন্না, বদরক্তের কোপ আমাদের ঘাড়ে ঝেড়ে নিজেদের ক্ষ্যামা ঘেন্নাপিত্তিতে ঢেকে রাখিস, কাপুরুষ!"
রোষ আর লড়াই থেকে বহুদূরে অন্ধকার। শুনসান নিস্তব্ধতা। সময়ের চোখ বন্ধ। দূরের বা কাছের ল্যাম্পপোস্ট বা চাঁদ বা তারা কাকতালীয়ভাবে একসাথে আলো পাঠানো বন্ধ করেছে। নিজের বুকের শব্দ একটু একটু বড় হচ্ছে বিন্দু থেকে ছোট থেকে বড় ও অতি বড় বৃত্ত হয়ে গোটা ঘর গমগমিয়ে দিচ্ছে। অতি দ্রুতলয় দ্রিমদ্রিম শব্দ। সময় অবাক হল না। ভগবান আসছেন নিজের সাথে মুখোমুখি বসতে।
~ তুমি কে ? ভগবান!
> আমায় চেনোনা! আমি অনন্ত, সবাই আমাকেই বলে অস্তিত্ব। তুমি কে হে?
~ আমি নগন্য, প্রায় শূন্য। আমার নাম মূহুর্ত।
নগন্য থেকে নগন্যতম প্রায় শূন্য মূহুর্তের মালা বুনে চলেছে সুতো, এক কাল থেকে অন্য এক কাল, এক গ্রহাণুপুঞ্জ থেকে অন্য গ্রহাণুপুঞ্জ। মেঘ, বৃষ্টি, জমি, আগুন, বীজ বুনে চলেছে... প্রাণ থেকে প্রাণের বিবর্তনে মায়াবী রেশমের জাল.... ছাড়িয়ে নিতে গেলে জড়িয়ে যায় প্রত্যঙ্গ, শ্বাস, রক্তকণায়.... জড়িয়ে যাচ্ছে, ভিজে যাচ্ছে, পুড়ে যাচ্ছে মায়ারজ্জু এমনিই... দরদাম তুল্য মেপে মূল্য দেবে এমন কার সাধ্য! বিন্দু বিন্দু জুড়ে জুড়ে কালের অথৈ সমুদ্রে আমরা, কেউ না!
Proti baare emon kobita chaai
ReplyDeleteপাবে। :)
DeleteProti baare emon kobita chaai
ReplyDelete