html

Saturday, April 7, 2018

অঞ্জন সরকার

একটি খুনের আসামী

অঞ্জন সরকার


মনের গোপন ইচ্ছেগুলো,
রেখেছিলাম চাপা দিয়ে সময়-ধুলো।
চেয়েছিল জানতে, স্বচ্ছ বিবেকে,
যৌবনের এক উদ্বেল সন্ধ্যায়,
জীবনপথে, ধরে হাত পাশাপাশি,
চির-সঙ্গী হয়ে সে চলতে চায়?
কণ্ঠস্বরে তার, ছিল প্রত্যয়,
চোখে আশার খুশীর আলো।
হৃদয়ের ঝাঁপি খুলে বলেছিল,
“ আমি তো বাসিই,
তুমি কি বাসবে ভালো?”
এমন ভাগ্য আসেনি স্বপ্নেও,
মনে ভাবনা’র ঝড়, বৈশাখী।
পালহীন এক নৌকা আমার,
তারে এ নৌকায় কি করে রাখি!
জবাব দিতে পারিনি সেদিন,
কথা ঘুরিয়ে, দিয়েছি ফাঁকি।     
“পথচলা এখনও হয়নি ত শুরু,
শিক্ষার ভিত গড়া, আছে যে বাকি!”
বিদেশী অনেক ইউনিভার্সিটি,
তোমাকে, দিয়েছে যে হাতছানি।
আমায় খুঁজতে হবে উপার্জন ক্ষেত্র,
এ দেশেই, আমি তা জানি।
যাওয়ার দিনে করিনি ত দেখা,
মনে ছিল সংশয়।
এ হতভাগার জন্য ফিরবে এ দেশে,
সেটা কি কখনো হয়?
এক যুগ পরে কেন হোল দেখা!
প্রশ্নের জবাব ত পারবো না দিতে!
পালহীন নৌকায় আজো ভাসি আমি,
সেটা পারতো কি মেনে নিতে?
শুধিয়েছিলাম নিয়ে মুখে হাসি,
আজকাল কোন দেশে থাকা হয়?
তার ছেলেমেয়ে ক’টি,
সংসার সে পেতেছে কোথায়?
ক্ষণিকের মেঘ দেখা দিল চোখে, তারপর
স্মিত হাসি মুখে, পুরানো সেই প্রত্যয়।
বলে, “একবার মন দিয়ে ফেলে কি,
অন্যকে প্রতারণা করা ঠিক হয়?”
চারিপাশে সব করে টলমল,
হায় আজ এ কি শুনি।
কাঠগড়ায় আজ দাঁড়িয়ে আসামী,
আমি প্রেমের এক খুনি।


পরাজয়


বেশ কিছুদিন হল তোর কথা খুব মনে পড়ছিল।
সেই যে সেদিন বজ্র বিদ্যুৎ নিয়ে বৃষ্টি ঝরছিল।
সেই দুর্যোগের রাতেই সব তার ছিঁড়ে
অন্ধকার রাতে, মেঘ, বৃষ্টি, ঝড়ে
একগুঁয়ে জেদে, অনির্দিষ্টের পথে রেখেছিলি পা।
মনুষ্যমাত্রেই, হতে পারে রাগ, অভিমান, অভিযোগ,
আশাহত হয়ে বেড়ে যেতে পারে অন্তর্নিহিত ক্ষোভ।
আমার ওপর রাগ করেই গিয়েছিলি, তাই না?
বহুদিন কোন চিঠি তোর পাইনি, খবরও দেয়নি কেউ।
আমার ও তোর শরীরে, রক্ত তো সেই একই,
সেই অভিমানেই হয়ত যাইনি তোকে খুঁজতেও।
হঠাৎ এত বছর পরে, লীনা এসে করলো প্রণাম,
কাগজে দেখাল পুরস্কৃতের তালিকা’র উপরে তোর নাম।
আমার সীমিত দূরদৃষ্টি ছিল পাড়া’র স্কুলের টিচার পর্যন্ত।
বুঝি নি, চাষার সন্তান ছুঁতে চায় আকাশ, সুদূর দিগন্ত।
সেদিন হারার আনন্দে আমি খুব কাঁদলাম।
এ পরাজয়ে, জয়ের চেয়ে কতো বেশি সুখ, বুঝলাম।

No comments:

Post a Comment

Facebook Comments