সম্পর্কের গল্প
সৌরাংশু
বল পালাই কোথা
দেশে আর থাকা চলে না…
এই গানটায় একটা লাইন ছিল না? সম্পর্ক টম্পর্ক পাতালে পরে ইত্যাদি। তা সম্পর্কটা কি? এবং কতপ্রকার?
আগে প্রকারান্তর করি তারপর নাহয় সজ্ঞানে সংজ্ঞা নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করব। সম্পর্ক চার প্রকারঃ
১) জন্মসূত্রঃ বাপ, মা, ধর্ম, জীন, ভাই বোন, খুল্লতাত, পিসতুতো দাদা- এইসব সম্পর্ক জন্মের নাড়ি ধরেই চলে আসে চাইলেও কাটানো যায় না। আর চাইবেনই বা কেন? Already established ব্যাপার স্যাপার রয়েছে, সেখানে আমার মাথা তোমার মুণ্ডু বলে নেচে কুঁদে কি বিপ্লবটা হবে শুনি?
২) কর্মসুত্রঃ এর মধ্যে বন্ধু বান্ধবী, না না না না বল boyfriend, girlfriend সব চলতা হ্যায়। পথচলতি সহযাত্রীর সঙ্গেও তো একটা সুন্দর বোঝাপড়া তৈরী হয়। এই সূত্রের ভালো দিক হলো দড়ি টানা টানি কম।ভালো থাকলে ভালো, নইলে মানে মানে কেটে পড় বাছা। সময় নষ্ট করার মত সময় কোথা?
৩) ধর্মসূত্রঃ এটা কখনও কখনও ২ নম্বরের পরের ধাপ, এবং বেশ জটিল। এ সম্পর্কে “ত্বমসি মম জীবনং…” বলে বুলি কপচানোও আছে আবার খেরোর খাতায় প্রমাণ রাখার গল্পও আছে, এটাও যদি মনে হয় তাহলে ছিঁড়ে ফেলাও যায় তবে কি না সমাজ এবং বিবেক ইত্যাদি রূপোলী পরত চড়িয়ে একটু মজবুত করার চেষ্টা করা হয়েছে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে খোরপোষের হ্যাপা। খামোকা তাই সুস্থ শরীরকে ব্যস্ত করা কেন? কিন্তু “শরীর শরীর তোমার মন নাই কুসুম?” এখানে গিয়েই তো যত চাপ। প্রাপ্তবয়স্ক সম্পর্কগুলি যদি কাগজের বাসিফুল হয়ে থেকে যায় তাহলে তো সুতোর অস্তিত্বই সঙ্কটে পড়ে। মন যদি প্রাণের মানুষ এলে না জাগে তাহলে আর ঘুম ভেঙে কি হবে। তার চলে যাবার শব্দেই তো জগৎ সংসার অন্ধকারে ডুবে যায়।
৪) জন্মান্তরের সম্পর্কঃ “কিঁউ জি? হাম আপকে হ্যায় কৌন?” আছে কোনো উত্তর? নাকি সেই তিনটে ডিবস আর পাঁচটা বৈঠক দিয়ে জড়িয়ে ধরতে গিয়ে জলে? এ সম্পর্কের নাম হয় না। দ্রৌপদী কে ছিলেন শ্রীকৃষ্ণের? অথবা কাবুলিওয়ালা মিনির? বলতে পারো? শুধু মাত্র বন্ধু? নাকি আত্মার সম্পর্ক? এখানে জন্মের সম্পর্ক নেই কর্মের সম্পর্ক নেই ধর্মের সম্পর্ক নেই আছে সেই সুতো যা যুগ যুগ ধরে মানুষের মনের মান আর হুঁশকে নাড়া দিয়ে নাড়াবাঁধা করে রেখেছে। মানুষ মানুষের জন্য- জীবন জীবনের জন্য। যখন একটা জীবন না চেয়েও অন্য জীবনের সঙ্গে জুড়ে যায় তখনই তো মনে হয় এক জন্মে কি এই সম্পর্কের শেষ হবে? নাকি বারে বারে মুকুলের মতো সোনার কেল্লা খুঁজে বেরাবো? মাঝ রাতে কাক্কাজির মত গাইতে বসব, “মেরে নয়না শাওন ভাদো… ফির ভি মেরা মন পেয়াসা…” এই পেয়াস তো বোজার নয়। এই পিয়াসাই তো আশাটাকে বাঁচিয়ে রাখে মানব সম্পর্কের বাঁধন যে তাই মন দিয়েই জুড়ে থাকে।
সম্পর্কটা তাহলে কি? সে কি শুধুই হৃদয়হীন বন্ধন? নাকি মন দিয়ে মনের যত্ন নেওয়া, লেন দেন? নাকি বেহিসাবি হিসাবহীনতা? শুধুই কি Attachment? নাকি সঙ্গে personal ব্যাপারটাও থাকে? খুঁজে দেখুন মনে, ডুবে দেখুন মনে, দেখবেন মাথা তো সবাইকে নিয়ে কাজ করে। কিন্তু মন জানে শুধু নিজেকেই। নিজে ভালো না থাকলে অন্যকে ভালো রাখি কি করে বলুন তো? টস করুন, টস করুন। হেড অথবা টেলের মধ্যে একটাকে বেছে নেবার জন্য নয়। কয়েনটা যখন আকাশে থাকে তখন আপনার মন জেনে যাবে কি চাইছে? হেড না টেল? হেড হলে হেড , use your head and only head and keep no place for heart. আর টেল হলে? Live to tell a tale… গল্প তৈরী হবে, জীবনের গল্প, সম্পর্কের গল্প, যেখানে মানবিক বন্ধনগুলি মানসিক বন্ধনে পরিণত হয়ে সম্পর্কের ভিত্তি মজবুত করবে।
জন্মান্তরের সম্পর্কটি ভয়ানক গোলমেলে। তত্ত্ব, তথ্য সব ফেল মেরে যায়।
ReplyDeleteThis comment has been removed by the author.
ReplyDeleteLekha ti sonaan ni
ReplyDeleteJeno dukaane guje diyechhn