html

Saturday, April 28, 2018

স্বাতী নাথ

আলো

স্বাতী  নাথ


পিত্থিবীট কত বড় হে
           কত্ত রকম মানুষ জন
ভালো মাইনষের অভাব বড়
             তুমহি যে তার একজন

লাল পাহাড়ির ম্যায়ে আমি
              মুখ্যু সুখ্যু মানুষ আছিই
এই পাহাড় টর বাইরে আমি
               লাই জাইনতম কিছুই

চৈত ফাগুনের উদমা হাওয়ায়
                রদের ত্যাজে মাটী  খরায়
লাচে লাচে লাল ধুলাট
                  গ্যায়ে পড়ে সুহাগ জানায়

ভাদর মাসে জলের দিনে
                   ধান বুনি সারাট দিন
বাকি সময় মাটী কাটি
                    ইঁট বইয়ে দিন গুজারি

ম্যায়া মরদ নুনু বুড়হা
                   কাম ছাড়া কেউ থাকতে লারে
পান্তা ভাতে প্যাট ভরায়ে
                   টুটি ভিজাই মহুল রসে

কাইটছিল দিন এমনি ভাবই
                   বাঘমুন্ডির পাহাড় খানে
আইলে তুমি দিদিমুনি
                    জ্ঞানের আলো জ্বালাই দিতে

বইদল্যে দিল্যে সকল কিছু
                   দেখলম তুমহার চখে দুনিয়াট
কত্ত কিছু জানার আছে
                   বুঝাই দিল্যে তুমি সিট

মানুষ হামরাও ----
                    সিটাই তুমহি শিখহাই দিল্যে
মাইনব না আর চখ রাঙানী
                     বড়লোক  ওই বাবুদিগের

হামরা খাইটে চাষ করি
                      আর উরা ভরে গুলা
পান্তা আমানি খ্যায়ে কাটাই
                        উদের বিলিতীর ফুয়ারা

চইলবে না আর এমনি ভাব
জোর জুলুম মুদের উপর

লড়াই কইরে ছিনাই লিব
সকল খানের হক ট মুদের।



একাকীত্ব



কেটে যায় দিন, বয়ে যায় বেল
জীবনের ক্ষণ  গুলি শুধু যে একেলা
কত বসন্ত ও বৈশাখ এলো আর গেলো
মনের আঙিনায় কেউ এলো নাতো
ডুরে পাড় শাড়ী  তে আলুথালু কেশে যে
ছুটে বেড়ায় বনে আলতা মাখা পায়েতে
বকুলের মালা গেঁথে হয়তো বা আনত
কল কল নদীর মতো উচ্ছল সে হোতো
জ্যোৎস্না রাতেতে গাইত যে গান
মুগ্ধ প্রেমিক আমি, বাঁশী  বাজাতাম
কাটতো সাঁতার সে ছোটো নদীটির জলে
পিছু নিতাম তার, আমি হাঁস হয়ে
গ্রীষ্মের দুপুরে গাছের তলায় পড়তো সে বই
যেন কোনও চিত্রকারের আঁকা ছবিটাই
ঝর ঝর বর্ষায় মুখরিত বন
ময়ূরের মতো নেচে উঠে দুটি মন
রোদ ঝলমল খুশিতে হাসে শারদের আকাশ
নদীর চরে দুজনে ফুটে উঠি হয়ে কাশ
শিউলি  ঝরানো বীথিকায় বসি দুজনায়
কথার মালা গাঁথতাম শারদ পূর্ণিমায়
 পৌষের দুপুরে মেঠো পথ দিয়ে
হারিয়ে যেতাম দুজনে বাউলের সুরে
 মৌ হয়ে বসন্তে ফুলের মধু খেতাম
ফাগের রঙ এ দুজনে রঙিন হতাম
এমনি ভাবে মনকে রাঙাতে এলো নাতো কেউ
শূন্য বাগানে কেউ ফোটাল না ফুল।


গাজন



অ বুধুর মা শুন ক্যানে
গাজন ট য় লাই যাবি?
কত্ত কিছু হুঁইতেছে রে
কত্ত বাজনা, লাচ
দুকান বইসছে কত
লাল,নীল চুড়ি মালা
কিনবিক লাই,লাগর দোলা ট চাইবিক লাই?
সাধুরা সব আইছেরে,চড়ক গাছ ট ও হুঁইছে
কী র‍্যা সাড়া দিস না ক্যানে
কী অতো কাম কইরছিস?

অতো চিচাঁও ক্যানে বুধুর বাপ?
গাজন টর কুথা জানো
আর কাইলকে কি আছে
সি ট জাইনলে না,
কাইলকে লিতুন বছর শুরু হবেক গ
বোশেখের পেত্থম দিন
তার লিগে ঘর ট সাফাই কইরে
গোবর ল্যাতা দিতে হব্যে
ফুল দিয়ে সাজাই মারাং বুরুর পূজা হবেক গ
কাইলকে আর মাড় ভাত ট চইলবেক লাই
হবে ঝইলাসানো মাস আর মহুল রসের হাঁড়িয়া
রেতের বিলা মাথায় চাঁপা ফুল গুঁজ্যে
ধামসার তালে তালে তুমহার সাইথে
কোমর  দুলাই লাইচব আমি ঝুমুর লাইচ ট
তার আইগে লতুন চুড়ি মালা কিইনব আমি, গাজনের মিলাটয়
ইয়ার পরে তো শুরু হবেক খরার দিন
রদের ত্যাজ ঝলসাই দিবেক গাঁ ট কে
উয়ার আইগে মাইতব সবাই লাচের তালে।



2 comments:

Facebook Comments